সমকাম বা হোমোসেক্সুয়াল
১।
পাশের বাড়ির শিপু ভাই একা ঘুমায়। মিরাজদের বাসার কোনো মেহমান আসলে মিরাজকে শিপু ভাইয়ের ঘরে গিয়ে ঘুমাতে হয়। মিরাজের যেতে ইচ্ছে করেনা, তবুও কিছু করার থাকেনা। কারণ মেহমান আসলে মিরাজদের ছোট বাড়িতে ঘুমানোর আর কোনো জায়গা ফাকা থাকেনা।
মিরাজ ক্লাস সেভেনে পড়ে। আর শিপু ভাই ইন্টারের ফার্স্ট ইয়ারের স্টুডেন্ট। মিরাজের প্রায় রাতে ঘুম ভেংগে যায়৷ সে আবিষ্কার করে একটি হাত তার গোপন অঙ্গের দণ্ডদেশ নাড়তে থাকে। অস্বস্থিতে মিরাজের ঘুম ভেংগে যায়। শিপু ভাইকে কিছু বলতে পারেনা। কারণ শিপু ভাই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন থাকে বলে মনে হয়। এমনই একদিন মিরাজ শিপু ভাইয়ের সাথে ঘুমিয়ে ছিল। হঠাৎ ব্যাথায় ঘুম ভেংগে যায় মিরাজের। সে বুঝতে পারে শিপু ভাইয়ের দণ্ডদেশ মিরাজের পশ্চাৎদেশে প্রায় প্রবেশ করেছে। যে মুহুর্তে মিরাজ শব্দ করে উঠেছে সেই মুহুর্তে শিপু ভাই মিরাজের মুখ চেপে ধরেছে। এরপর যা হবার হয়ে গেছে সেই রাতে। এরপর থেকে আর কখনোই মিরাজকে রাজি করানো যায়নি শিপু ভাইদের বাসায় ঘুমাতে যাওয়ার জন্য। মিরাজ এখন বড় হয়েছে। কিন্তু ছোট বেলার সে ট্রমা থেকে এখনও বের হতে পারেনি। সে কোনো পুরুষের সাথে একা কোনো রুমে ঘুমাতে পারেনা। ভয় তাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে আজও।
২।
হাকিমপুরের জামিয়া মাদ্রাসার হাফেজ মুফতি সবুর বিন মালেক হলেন একজন সম্মানিত আরবী শিক্ষক। তার সুখ্যাতি পুরো হাকিমপুরের অঞ্চল জুড়ে। তিনি সাধারণত হাফেজি ছাত্রদের পড়ান। এই মাদ্রাসা আবাসিক এবং অনাবাসিক উভয়। সবুর মাদ্রাসায় রাতে থাকেন ছাত্রদের পাশের কামরায়। একদিন রাতের বেলায় উনার রুমে একজন ছাত্রের চিৎকারের শব্দে পাশের রুমের ছাত্রদের ঘুম ভেংগে যায়। পাশাপাশি মাদ্রাসার প্রহরীসহ সবাই হুজুরের রুমে প্রবেশ করেন।
সবাই পরিস্থিতি দেখে হতবাক। সবুর হুজুরের রুমে ছাত্র ওসমান খাটে বেহুশ হয়ে শুয়ে আছে। পাশে সবুর হুজুর দাঁড়ানো। ওসমানের জ্ঞান ফেরার আগেই হুজুর রুম থেকে কী এক কাজের কথা বলে বেড়িয়ে যায়। পরে ওসমানের যখন জ্ঞান ফিরে সে সব বিস্তারিত বলে। ততক্ষণে মাদ্রাসার অন্যান্য ছাত্ররাও জেগে উঠেছে। এই ঘটনা শুনে মিজান জামাতের ছাত্ররা উত্তেজিত হয়ে যায় এবং সবুর হুজুরকে খোঁজতে থাকে। কিন্তু ততক্ষণে সে এলাকা ছেড়ে লাপাত্তা। পরবর্তীতে বিভিন্ন ছাত্রদের থেকে জানা যায় যে, সে ছোট ছোট বাচ্চাদের রাতে তার সেবা করার নাম নিয়ে তাদের সাথে সমকামিতায় লিপ্ত হতো। নিষ্পাপ শিশুগুলো হতো বলাৎকার।
৩।
সজিব এবং আসিফ একই বছর ভার্সিটিতে এডমিশন নিয়েছে। সজিব হিন্দু এবং আসিফ মুসলিম। দুজনের বাসা দুই জেলায় কিন্তু ভার্সিটিতে এসে পরিচয়। সজিব আসিফের সাথে ঘুরতে পছন্দ করে। আসিফেরও তাই। আসিফের একটি গার্লফ্রেন্ড হয়েছে ভার্সিটিতে। সজিবের কেন জানি এটা ভালো লাগেনি। যাইহোক, সজিব যে বাসায় ভাড়া থাকে সেখানে আসিফকে প্রায় ইনভাইট করে। আসিফ যায়। ওদের মেস মেম্বারদের সাথে ভালো একটি সম্পর্ক তৈরি হয়ে উঠে আসিফের। আসিফ আজ সজিবদের মেসে থাকবে। তাই সজিব তার রুমমেটকে বলে অন্য রুমে যেতে যাতে তার গেস্ট তার রুমে ঘুমাতে পারে। আর মেসের নিয়ম অনুযায়ী সবাই এটা সেক্রিফাইজ করে।
সেদিন রাতে সজিব আর আসিফ একসাথে ঘুমায়। প্রথমে গল্প করতে করতে অনেক রাত হয়ে যায়। পরে দুজনে মিলে ল্যাপটপে একটা রোমান্টিক মুভি দেখা শুরু করে। মুভির রোমান্টিক সিনের সময় সজিব হুট করে আসিফকে চুমু দিয়ে বসে। একটা ছেলে হয়ে আরেকটা ছেলেকে চুমু! আসিফ পুরাই হতভম্ব হয়ে যায়। এরপর সজিব আসিফের গোপন অঙ্গে হাত দিয়ে বসে। আসিফ যেন পাথরের মত হয়ে যায়। এরপর যা হবার সে রাতে হয়।
আসিফ এই ঘটনার জন্য প্রস্তুত ছিল না। কিন্তু সে সজিবকে ইগনোরও করতে পারছিল না। তাই আসিফ প্রায় সজিবের মেসে আসতো এবং সজিবের সাথে থাকতো এবং আগের মতই নিয়মিত চলতে থাকে নিষিদ্ধ এবং বিকৃত যৌনসম্পর্ক। একসময় ভার্সিটিতে এরা দুজন LGBT গ্রুপের অন্যতম পদে আদিষ্ট হয়।
"ইন্ডিয়ার সুপ্রিমকোর্ট সেকশন ৩৭৭ এর আওতায় সকল প্রকার ভালোবাসা ও বিবাহের অনুমতি দিয়েছে। মানে হলো ‘গে ম্যারিজ’ ‘লেসবিয়ান ম্যারিজ’ ‘হোমোসেক্সুয়ালিটি’ কোন কিছুই আর অবৈধ হিসেবে উল্লেখ করা যাবে না। এই সবকিছুকেই এখন আইনিভাবে বৈধতা দেয়া হলো।"
ইন্ডিয়ার হোমোসেক্সুয়ালিটি বৈধতা দেওয়া এই নিউজ শুনার পর অনেকেই হয়তো মনে কষ্ট পেয়েছে, অনেকে রাগে ক্ষোভে ইন্ডিয়ার সুপ্রিম কোর্টকে অভিশাপ দিয়েছে, আবার অনেকে এই খবর শুনে ঈদের চেয়েও বেশি খুশি হয়েছে। এই নিউজ শুনে শুধু গে এবং লেসবিয়ানরা খুশি হয়নি সাথে অন্যান্য কিছু মানুষও খুশি হয়েছে। তারা আর কেউ নয় তারা ঐসব লোক যারা ধর্মকে মানেনা এবং যারা ঈমানদার তাদের ধ্বংস চায়।
বর্তমানে হোমোসেক্সুয়াল শব্দটি বিদ্বৎসমাজে এবং চিকিৎসাবিজ্ঞানে ব্যবহৃত হলেও ‘গে’ এবং 'লেসবিয়ান’ শব্দ দু’টি জনসাধারণের নিকট অধিক জনপ্রিয়। গে শব্দটির দ্বারা পুরুষ সমকামীদের বোঝানো হয় এবং নারী সমকামীদেরকে বোঝানো হয় লেসবিয়ান শব্দটির দ্বারা।
গে শব্দটি উনিশ শতকে ব্যবহর শুরু হলেও বিংশ শতকে এসে ব্যাপক প্রচারণা লাভ করে। গে শব্দের শাব্দিক অর্থ উজ্জল, শুভ্র, চকচকে ইত্যাদি। গে শব্দটি প্রাথমিকভাবে সমকামী বা সমকামী হিসেবে বৈশিষ্ট্যায়িত ব্যক্তিকে বোঝায়। গে শব্দটি বাংলা ভাষায় আরেকটি পরিভাষা রয়েছে তা হলো পায়ূকামিতা। পায়ূকামিতা শব্দটি ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে যখন বাংলাদেশের হেফজ ও কওমি মাদ্রাসায় এতিম ও শিশু শিক্ষার্থীদেরকে তাদের ওস্তাদ কর্তৃক বলৎকার খবর প্রায় মিডিয়ায় আসছিলো। পায়ূকামিতা আর বলৎকার একে অপরের পরিপূরক। তবে পার্থক্য হলো পায়ূকামিতা দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ করে থাকে কিন্তু বলৎকার একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ একজন শিশুর সাথে জোর করে করে থাকে।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে গে শব্দটি বিশেষ্য ও বিশেষণ উভয় অর্থেই ব্যবহৃত হয়। গে সম্প্রদায়ের নির্দিষ্ট পতাকা রয়েছে। পতাকার রং রামধনু বা রংধনুর মতো। গে সম্প্রাদায়ের নির্দিষ্ট শব্দ ভান্ডার রয়েছে, এই শব্দ দ্বারা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য ব্যবহার করে থাকে। তারা মূলত এইসব শব্দ ব্যবহার করে নিজেদের পরিচয় আড়াল করে রাখার জন্য, কেননা পৃথিবীর অধিংকাংশ মানুষ গে সম্প্রদায়কে ঘৃণা অথবা অবহেলার চোখে দেখে।
সমকামী মহিলা বা লেসবিয়ান মূলত এমন একজন ব্যক্তিকে বোঝায়, যে নারী অন্য নারীর প্রতি ভালবাসা অথবা যৌন আকর্ষণ অনুভব করে। এটি মানব যৌনাচারের একটি যৌন অভিমুখিতা। মহিলা সমকামী অথবা সমলিঙ্গের প্রতি আকৃষ্ট ব্যক্তির বিশেষণ হিসেবে লেসবিয়ান শব্দটি ব্যবহার করা হয়। সমকামী মহিলার ইংরেজি পরিভাষা লেসবিয়ান। এই শব্দটি এসেছে একটি গ্রীক দ্বীপ থেকে। সেই দ্বীপটির নাম ছিল লেসবস। এখানে খ্রিষ্টপূর্ব ৬ষ্ঠ সনে বসবাস করতেন একজন কবি যার নাম ছিল সাপ্পো। বহু লেখনী থেকে ঐতিহাসিকরা জানতে পেরেছিলেন যে, কবি সাপ্পোর কাছে কিছু মেয়ে সাংস্কৃতিক উন্নয়ন স্বার্থে বা শিক্ষার কারণে কিছুদিন অবস্থান করেছিল। কবি সাপ্পোর খুব একটা লেখা খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবুও যা পাওয়া গিয়েছে তার মধ্যে তিনি সবসময় মহিলাদের দৈনন্দিন জীবন, তাদের সম্পর্ক, অভ্যাস, আচার ইত্যাদি নিয়ে লিখেছিলেন। তিনি মূলত একজন নারীর সৌন্দর্য নিয়ে লিখতেন এবং বালিকাদের প্রতি ভালোবাসাও ছিল তার সাহিত্যকর্মের বিষয়বস্তু। উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্ত লেসবিয়ান শব্দটি দ্বারা এই লেসবস দ্বীপ সম্পর্কিত কিছু বোঝানো হতো, আবার এক বিশেষ ধরণের ওয়াইনের নামও ছিল লেসবস। অনেকেই মনে করেন এই লেসবস শব্দ থেকেই লেসবিয়ান শব্দের উৎপত্তি।
আসুন একটা গল্প বলি, বাস্তব গল্প। সিফাত যখন ছোট তখন তার হাই স্কুলের মাঠে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে একটি ছেলে সে মেয়েদের মত করে করে নেচেছিল এবং দর্শক তার এই মেয়েলি নৃত্য নাচে খুশি হয়ে তাকে করতালির মাধ্যমে ১০০ তে ১০০ মার্ক দিয়ে দিছিলো। হাই স্কুলের পাশে সাকসেস কোচিং সেন্টারে সিফাত পড়তে যেত নিয়মিত। তাই সেই সুবাধে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখার সুযোগ হয়েছিল সিফাতের।
তার কিছুদিন পর এক ভাইয়ের সাথে রিক্সায় করে সিফাত এক জায়গায় যাচ্ছিলো। পথিমধ্যে ঐ ছেলেটাকে দেখ্লো যে তার হাই স্কুল মাঠের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নেচেছিল। সিফাত রিক্সায় বসা পাশের ভাইকে বললো, 'ভাই দেখেন ঐ ছেলেটা এত সুন্দর করে নাচে বিটিভির কোনো নৃত্য অনুষ্ঠানে গেলে নিশ্চিত ফার্স্ট হবে'।
সেই ভাই সিফাতকে বললো, তুমি কি তার সমন্ধে একটা ঘটনা শুনেছো? সিফাত বললো, কোন ঘটনা? সে বললো, ‘এই ছেলেটা আরেকটা ছেলেকে বিয়ে করতে চেয়েছিলো। এ নিয়ে এলাকায় সেই রকম একটা হাসি তামাশার ঝড় উঠেছিল এবং চায়ের দোকানেও চলতো এ নিয়ে কথাবার্তা এবং এলাকার মানুষ তাকে বিচারের আওতায় এনেছিল’। সিফাত এই কথা শুনে হাসতে হাসতে শেষ। সিফাত বললো, ভাই মজা করিয়েন না তো, একটা ছেলে আরেকটা ছেলেকে কিভাবে বিয়ে করে?
ভাই বললো এটার একটা কারন আছে। তুমি বড় হও তাহলে অনেক কিছু জানবে এবং বুঝবে। আসলে ঐ ভাইটি ঠিকই বলেছিল বড় হলে সিফাত বুঝবে। তবে সিফাতের আঠারো প্লাস বয়স হওয়ার আগেই এই বিষয় মোটামুটি জানতে পেরেছিলো অনলাইন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে।
আমেরিকান সাইকোলজি এসোসিয়েশন এর সংজ্ঞায় বলা হয়েছে যে, "হোমোসেক্সুয়ালিটি বা সমপ্রেম বলতে সমলিঙ্গের ব্যক্তির প্রতি রোমান্টিক আকর্ষণ, যৌন আকর্ষণ অথবা যৌন আচরণকে বোঝায়। যৌন অভিমুখীতা হিসেবে সমকামিতা বলতে বোঝায় মূলত সমলিঙ্গের ব্যক্তির প্রতি আবেগীয়, রোমান্টিক বা যৌন আকর্ষণের একটি স্থায়ী কাঠামোবিন্যাস।" এই সংজ্ঞাটি এখন উইকিপিডিয়া ব্যবহার করে থাকে সমকামিতার সংজ্ঞা দিতে গিয়ে।
সহজ বাংলায় বললে যা দাড়ায় তা হলো একটা ছেলের প্রতি আরেকটা ছেলের যৌন আকর্ষণ বা যৌনক্রিয়া এবং একটা মেয়ের প্রতি আরেকটা মেয়ের যৌন আকর্ষণ বা যৌনক্রিয়া। গুগলে সার্চ দিলে এ বিষয়ের উপর হাজার হাজার আর্টিকেল পাওয়া যাবে। কেউ সমকামিতার পক্ষে লিখেছে আবার কেউ বিপক্ষে।
আপনি কি জানেন আপনার আমার আশেপাশেই এমন অনেক হোমোসেক্সুয়াল ব্যক্তি রয়েছে। যাদের সাথে এই হোমোসেক্সুয়াল ব্যক্তির সাথে স্বাক্ষাৎ হয়েছে বা যারা হোমোসেক্সুয়াল ব্যক্তির ব্যবহার সমন্ধে জ্ঞাত তারা এইসব বিষয়ে জানে এবং এসব মানুষকে খুব সহজে চিনে ফেলে। আপনি যদি হোমোসেক্সুয়াল ব্যক্তিকে চিনতে চান তাহলে সমকামীদের আচরণ সম্পর্কে জানতে হবে।
যারা সমকামী তাদের চেনার একটি সহজ উপায় হলো এরা আপনার সাথে যখন একাকী মিশবে তখন অন্যান্য ৮/১০ মানুষের চেয়ে ব্যতিক্রম কিছু আচরণ করবে। এর মধ্যে অন্যতম হলো এরা আপনার স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিতে চেষ্টা করবে। যেমন; ঘাড়, বুক, পেট এবং নিম্নদেশ। এরা আপনার পাশে ঘুমালে আপনাকে যৌন উত্তেজনায় উত্তেজিত করার চেষ্টা করবে। আর ফেইসবুকে যদি ফ্রেন্ড হিসেবে থাকে তাহলে চ্যাটিং এর স্টাইল হবে একজন কামুকী মানুষের মত। আপনার ইনবক্সে সে তার নিজের অথবা অন্য কারো নগ্ন ছবি বা অন্য কোনো কিছু পাঠাতে পারে। আর যারা গে তাদের ব্যবহার মেয়েলী স্বভাবের এবং লেসবিয়ানদের ব্যবহার ছেলেদের মত। তবে কিছু চালাক গে এবং লেসবিয়ান আছে যারা ৮/১০ জন মানুষের মত চলে। সহজে বুঝা যায় না এইসব চালাক গে এবং লেসবিয়ানদের।
আপনি কি জানেন সমকামিতা বিশ্বের অনেক গুলি উন্নত দেশে বৈধ? এবং বিশ্বের অনেক গুলি দেশে এটা বৈধ করার জন্য সমকামীরা আন্দোলোনও করতেছে। এমন কি কিছু মুসলিম দেশেও এটা বৈধ করার পক্ষে আন্দোলন হয়েছে। বিশ্বের প্রায় ৩০টির অধিক দেশে আইনত সমকামিতা বৈধ। যার ফলে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে এর প্রভাব পড়তেছে।
ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি সমকামী ছিল। প্রাচীন যুগের অনেক রাজা সমকামী ছিল। এছাড়াও বহু ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব যেমন; লর্ড বায়রন, দ্বিতীয় এডওয়ার্ড, হাদ্রিয়ান, মাইকেল এঞ্জেলো, লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি, সিগমুন্ড ফ্রয়েড -এর ক্ষেত্রে সমকামী বা উভকামীর মত পরিভাষাগুলো মাঝেমধ্যে প্রয়োগ করা হয়।
মনোবিজ্ঞানে সমকামী হওয়ার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে- ‘সম্ভবত কোনো একটা কারণে এটা নির্ধারিত হয় না, বরং তা জিনগত, হরমোনগত ও পরিবেশগত একাধিক কারণ সমষ্টিগত প্রভাবেরই ফল।’
কিছু কিছু মনোবিজ্ঞানী বলেছেন- 'একজন সমকামী মানুষের সংস্পর্শে আরেকজন মানুষ সমকামী হতে পারে। কারণ, একজন সমকামী চায় তার বন্ধুরাও সমকামী হোক। তাই সে অপরকে সমকামী করার জন্য প্রভাবিত করতে চেষ্টা করে।'
সমাজ কর্তৃক জৈবিক লিঙ্গ ব্যক্তিবর্গের মানুষের আচরণ কেমন হবে তা মোটামুটি নির্ধারিত। যেমন; একজন ছেলে বাইরে কাজ করবে, শার্ট প্যান্ট পরবে, হাটার সময় গটগট করে হাটবেন। আর নারীরা ঘরে বসে থাকবে, ঐতিহ্যবাহী পোষাক পরবে এবং হাঁটার সময় ধীরে ধীরে হাটবে। এধরনের আচরণ একটা সমাজ জৈবিক ভাবে নির্ধারিত লিঙ্গের মানুষের কাছে প্রত্যাশা করে। কিন্তু সমকামী পুরুষেরা যখন কিছু মেয়েলী আচরণ জনসম্মুখে করে, তখন তাকে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তবে সমকামী নারীদের এই সমস্যার মুখোমুখি কম হতে হয়। সমকামী ব্যক্তিরা প্রতিটা সমাজেই যৌন সংখ্যালঘু। আর নিজের যৌন প্রবৃত্তি এভাবে কম হওয়ার জন্য তাদের মধ্যে মানসিক উদ্বেগ সবসময় কাজ করে।
সমকামিতা বিষয়টা যেমন আমাদের সমাজে নিষিদ্ধ, তেমনি এটা নিয়ে আলোচনা করাও যেন কথিত নিয়ম অনুযায়ী নিষিদ্ধ বলাই চলে। কিন্তু সমকামিতা যে হারাম সেটা যদি সবাইকে জানানো না হয় এবং সমকামিতা কী সেটা যদি মানুষ না জানে তাহলে দেখা যাবে কত মানুষ অজান্তেই সমকামিতায় লিপ্ত হয়ে গিয়েছে। স্কুল মাদ্রাসার কথাই ধরেন, প্রায় দেখা যায় অমুক প্রতিষ্ঠানের অমুক শিক্ষক তার স্টুডেন্টের সাথে বলাৎকার করতে গিয়ে ধরা পরেছে।
সমকামী মানুষ একটা সময় এসে ভীষণ ডিপ্রেশনে ভোগতে থাকে। সমকামী নারী পুরুষের মধ্যে যারা আত্মহত্যা করতে চায় তারা সমকামী বিদ্বেষী বিভিন্ন আচরণের শিকার হয়। দেখা যায়, যারা আত্মহত্যা করে না তাদের তুলনায় আত্মহত্যা করতে ইচ্ছুক সমকামীরা অধিক বিচ্ছিন্নতা, একাকিত্ব, বৈষম্য ও পরিবার থেকে ত্যাজ্য, এরকম ঘটনার মধ্য দিয়ে যায়। ফলে সমকামিরা দিনশেষে দেখে তাদের বিশ্বস্ত কেউ পাশে নেই। যাকে সে সমকামী সঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছিল সে অন্য কাউকে পেয়ে তাকে ভুলে গিয়েছে। ফলে সমকামী মানুষগুলো একটা সময় গিয়ে ভীষণ একাকীত্বে ভোগতে থাকে।
আরেকটি গবেষণা থেকে দেখা গিয়েছে যে, যেসব সমকামীরা আত্মহননের পথ বেছে নেয় তারা অধিক হারে যৌন ক্রিয়ায় নারীর ভূমিকা পালন করে। যারা অবিষমকামী পরিচয় তরুণ বয়সেই গ্রহণ করে। তাদের মধ্যে অনেকেই যৌন নির্যাতনের, মাদকাসক্তের শিকার হয়, বিভিন্ন আচরণগত কারণে গ্রেফতার হয়। অপর একটি গবেষণা থেকে দেখা গিয়েছে যে, নরওয়ের যেসব কিশোরেরা আত্মহত্যা করতে যায় তাদের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্টভাবে বলে দেওয়া যায় এই কিশোররা সমলিঙ্গে যৌনাচারণ করতে ইচ্ছুক। তবে তারা সমকামী এমনটা বলা যাবে না।
আসুন এখন দেখে নেই বিশ্বের প্রধান প্রধান ধর্ম এই সমকামিতা সম্পর্কে কী কী বলে। ওল্ড টেস্টামেন্ট আর নিউ টেস্টামেন্ট মিলে হলো বাইবেল। ওল্ড টেস্টামেন্ট ধর্মীয় গ্রন্থ হিসেবে ব্যবহার করে ইহুদিরা এবং নিউ টেস্টামেন্ট ব্যবহার করে খ্রিস্টানরা। ইহুদি এবং খ্রিস্টান ধর্মীয় পান্ডুলিপিগুলোতে 'লট' নামক প্রাচীন প্রফেটের সময় তার সম্প্রদায়ের সমকামী আচরণের নিন্দা করা হয়েছে এবং উক্ত সম্প্রদায়কে ঐশী বিপর্যয়ের মাধ্যমে ধ্বংস করার ইতিহাস বর্ণনার মাধ্যমে স্বীয় অনুসারীদেরকে সতর্ক করা হয়েছে।
হিন্দু ধর্মে বিষ্ণু ও মহাদেব শিবের হরিহর রুপে মিলন এইরকম একটি পৌরানিক আখ্যান থেকে অনেকের মতে সমকামিতা নির্দেষ করে থাকে। এখানে বিষ্ণু মোহিনী বা নারী বেশ ধারণ করে শিবকে আকৃষ্ট করেন শিব এই মায়া বুঝে উঠার আগেই শিবের বীর্য স্থালিত হয় এবং সেই বীর্য থেকে অযৌনভাবে অয়াপ্পান নামে একটি পুত্রসন্তান জন্ম হয় । যেহেতু এইসব কাহিনী পুরানসমুহ হতে জানা যায় তাই হিন্দু পন্ডিতরা এই কাহিনিকে আধ্যাত্মিক বিষয় মনে করে থাকেন।
হিন্দুদের নিকট সবচেয়ে পবিত্রতম গ্রন্থ হলো বেদ। বেদের আবার চারটি অংশ, যথা- ঋকবেদ, যজুর্বেদ, সামবেদ এবং অথর্ববেদ। এই বেদের কোথাও সমকামিতা নিয়ে কথা বলা হয়নি এবং সমকামিতার পক্ষে বা বিপক্ষে কোনো সম্মতিও দেয়নি।
হিন্দু ধর্মের এক ছোট ভাইয়ের সাথে সিফাতের ফেইসবুকে পরিচয় ছিল। সিফাত যখন অনার্সে ভর্তি হয় তারপরের একটি ঘটনা। ফেইসবুকে সেই ছোট ভাই তাকে ফেইসবুকে মেসেজ দিতো প্রায়। হাই হ্যালো ইত্যাদি চ্যাটিং হতো। এরপরে একদিন সে সিফাতকে বললো 'দাদা আপনাকে আমার খুব ভাল লাগে'। সিফাত যেহেতু নিজ এলাকায় সামাজিক টুকটাক কাজ করে তাই অনেকের নিকট থেকেই এমন প্রশংসামুখর বাক্য তাকে শুনতে হয়। আর সিফাতও প্রতি উত্তরে তাদের বলে থাকে 'আপনাকেও আমার ভাল লাগে'। তাই সেই চিন্তা ধারা থেকেই ঐ হিন্দু ছোট ভাইকে মেসেজের প্রতিউত্তরে সে বলে, 'তোমাকেও আমার ভাল লাগে ভাই'। এই মেসেজ দেওয়ার পরপরই ছোট ভাইটি লাভ ইমুজি দিয়ে কিছুক্ষণ পর তার অনেক গুলি অর্ধনগ্ন পিক সেন্ড করে এবং লিখে দেয় যে 'দাদা আমাকে এখন আপনার কেমন লাগে'। সিফাত তো পুরাই 'থ' হয়ে গেলো। বুঝতে দেরি হলো না যে এই ছেলেটি সমকামী। তাই সাথে সাথে তাকে ব্লক লিস্টে পাঠিয়ে দিলো।
বাংলাদেশে প্রচুর মুসলিম সমকামী রয়েছে। একজন মুসলিম সমকামীর কাহিনী; যে পাচঁ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে। তার সমকামিতার জন্য তার বিয়ের বছর খানেকের মাথায় তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়। ধানে চিটা থাকে এটা সকলেরই জানা। তাই সকল ধর্মের অনুসারীদের এমন কিছু মস্তিষ্ক বিকৃত কীট রয়েছে। এরা মূলত ধর্মীয় কোনো গ্রন্থ পড়ে সমকামী হয়না। এরা সমকামী হয় পরিবেশ পরিস্থিতিতে পরে অথবা নিজের খায়েশ বা চাহিদা মেটানোর জন্য।
এবার আসুন দেখি, বৌদ্ধধর্মের পবিত্রগ্রন্থ ত্রিপিটক কী বলে? ত্রিপিটকে সমকামী ব্যক্তিদেরকে পণ্ডক বলা হয়ে থাকে। ত্রিপিটকে বলা হয়েছে- ‘জন্মগতভাবেই এদের মধ্যে এধরনের সমকামী মানসিকতা থাকে। অতীত কর্মের কারণেই জন্মগতভাবে তাদের সেধরনের মানসিকতা তৈরি হয়।’ [মহাবর্গ অ.১০৫]। বৌদ্ধধর্ম স্বাধীন ধর্ম হওয়ায় এটি গৃহী সমকামীদের ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করে না। অন্যান্যদের মতোই তাদেরকেও দান ও শীল পালন করতে উৎসাহিত করা হয়ে থাকে।
'কনফুসীয় ধর্ম' এবং লাওসি রচিত তাও তে চিং মূলত একটি সামাজিক ও রাজনৈতিক দর্শন হওয়ার ফলে এতে সম বা বিপরীত কোনো রকম কাম সংক্রান্ত বিস্তৃত বিধিনিষেধ নেই। মিং সাহিত্যকীর্তিতে সমকামী প্রণয়কে বিপরীতকামী প্রণয় অপেক্ষা অধিক উপভোগ্য ও অধিক "সামঞ্জস্যপূর্ণ" বলে বর্ণনা করা হয়েছে।
ইসলাম ধর্মে সমকামিতা নিয়ে কী বলা আছে তার আগে বাংলাদেশের সমকামিতা নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক। কারণ, উইকিপিডিয়ার মতে বাংলাদেশের জনসংখ্যার মধ্যে ৮৬.৬% ইসলাম ধর্মাবলম্বী তবে অন্যান্য সমীক্ষাতে বলা হয়েছে বাংলাদেশে ৯০% মানুষ ইসলাম ধর্মাবলম্বী। তাই বাংলাদেশের সমকামিতা নিয়ে আলোচনা না করলেই নয়।
বাংলাদেশে প্রথম এলজিবিটি সংক্রান্ত জনসচেতনতা গড়ে তোলার বৃহত্তর প্রয়াস শুরু হয় ১৯৯৯ সালে, যখন রেংগ্যু নামক এক উপজাতীয় ব্যক্তি বাংলাদেশের সমকামীদের জন্য প্রথম অনলাইন গ্রুপ "গে বাংলাদেশ" প্রতিষ্ঠা করেন। বিটিএস, টিকটক, ইউটিউব এবং ফেইসবুক সেলিব্রেটিদের মধ্যে অনেকেই সমকামী এবং তারা বিভিন্নভাবে সমকামিতাকে প্রমোট করার আপ্রাণ প্রয়াস চালাচ্ছে। এছাড়াও বর্তমানে 'বয়েজ অব বাংলাদেশ' হল দেশের বৃহত্তম পুরুষ সমকামী সংগঠন। এই দলটি বাংলাদেশের ৩৭৭ নং ধারাটির অবসান চায়।
এখন দেখা যাক ৩৭৭ নং ধারায় কি বলা হয়েছে- "প্রকৃতিবিরুদ্ধ অপরাধ অর্থাৎ কোন ব্যক্তি যদি স্বেচ্ছায় কোন পুরুষ, নারী বা পশু প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধে যৌন সঙ্গম করে, তবে তাকে আজীবন কারাদণ্ড দেয়া হবে, অথবা বর্ণনা অনুযায়ী নির্দিষ্টকালের কারাদণ্ড প্রদান করা হবে যা দশ বছর পর্যন্ত বর্ধিত হতে পারে এবং এর সাথে নির্দিষ্ট অঙ্কের আর্থিক জরিমানাও দিতে হবে।"
অর্থাৎ এর মানে দাঁড়ালো বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা মোতাবেক সমকামিতা ও পায়ুমৈথুন শাস্তিযোগ্য ফৌজদারি অপরাধ, যার শাস্তি দশ বছর থেকে শুরু করে আজীবন কারাদণ্ড এবং সাথে জরিমানাও হতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশে সমকামিতায় অভিযোগে অভিযুক্ত আসামীর জন্য মৃত্যুদণ্ডের কোনো বিধান নেই। মধ্যপ্রাচ্যের অধিকাংশ দেশে সমকামিতার বিচার হলো মৃত্যুদণ্ড। এই জন্যই সমকামী মানসিকতা সম্পন্ন মিডিয়া গুলি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন ইস্যুগুলি নিয়ে সবচেয়ে বেশি প্রোপাগান্ডা চালায়।
ইসলাম ধর্মে কোন পুরুষের সঙ্গে পুরুষের বা নারীর সঙ্গে নারীর বিবাহ হতে পারে না। তাই সমকামিতা বা একই লিঙ্গের ব্যক্তির সঙ্গে যৌনসঙ্গম যিনার অন্তর্ভুক্ত। পবিত্র মহাগ্রন্থ আল-কুরআন সমলিঙ্গীয় যৌন সম্পর্ককে নিষিদ্ধ করেছে। আল্লাহ তা'আলা বলেন- "এবং আমি লূতকে প্রেরণ করেছি। যখন সে তার সম্প্রদায়কে বলল- তোমরা কি এমন অশ্লীল কাজ করছো, যা তোমাদের পূর্বে সারা বিশ্বের কেউ করেনি? তোমরা তো কামবশত পুরুষদের কাছে গমন করো নারীদেরকে ছেড়ে। বরং তোমরা সীমা অতিক্রম করেছো।" [সুরা আল আরাফঃ ৮০-৮১]
'ডেড সী' এই নাম টা জানে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ডেড সী এর নাম আমরা সবাই জানি কিন্তু এর ইতিহাস তেমন জানিনা। লূত (আঃ) এর সম্প্রাদয়ের ধ্বংসপ্রাপ্ত রূপই আজকের ‘ডেডসি’ বা মৃত সাগর। আজও তাতে কোনো প্রাণির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। এই অঞ্চলের তৎকালীন সমকামীদের শাস্তির কথা কুরআনে আল্লাহ তা'আলা বলেন, "অতপর যখন আমার হুকুম এসে পৌছল, এরপর যখন আমার সিদ্ধান্ত কার্যকর হলো, তখন আমি জনপদের উপরিভাগ নিচে এবং নিম্নভাগ উপরে উঠালাম। আর তার উপর স্তরে স্তরে কাঁকর-পাথর বর্ষণ করলাম।" [সুরা হুদঃ ৮২]
সমকামিতার শাস্তি হিসেবে পরকালে যে দণ্ডবিধি ইসলামে নির্ধারণ করা হয়েছে তার আগে সমকামিতার ইহকালিন ভয়াবহতা একটু বলতে চাই। ১৯৮১ সালে নিউইয়র্ক ও ক্যালিফোর্নিয়াতে প্রথম এইডস ধরা পড়ে। আপনারা জানেন কি সেই ব্যক্তি কারা ছিল? তারা ছিলো সমকামী! আর সকলেরই জানা যে এখনও অবধি এইডসের প্রতিশেধক আবিষ্কৃত হয়নি। সমকামিতার ফলে শুধু এইডস না, এই এইডসের মত আরো ভয়াবহ রোগ পৃথিবীতে ছড়াতে পারে।
এই ভয়াবহ রোগ নিয়ে দেড় হজার বছর আগে প্রদত্ত রাসুল (সাঃ) এর সতর্কবানী কতোটা সত্যি হলো তা একটু দেখি। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ‘যখন কোনো জাতির মধ্যে অশ্লীলতা এমনভাবে ছড়িয়ে পড়ে যে তারা প্রকাশ্যে অশ্লীলতায় লিপ্ত হতে থাকে তখন তাদের মধ্যে এমন রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ে যা তাদের পুর্বপুরুষদের মধ্যে ছিল না।’ [ইবনে মাজাহঃ২/১৩৩২]
যেহেতু সমকামিতা পরকীয়া বা ব্যভিচারের চেয়েও ভয়ানক পাপ সেহেতু সমকামিতার ইহকালিন দণ্ডবিধির প্রেক্ষিতে রাসুল (সাঃ) বলেন, "যাদেরকে তোমরা লুত (আঃ) সম্প্রদায়ের কাজের মত অর্থাৎ সমকামে লিপ্ত দেখবে তাদের উভয়কেই হত্যা করো।” [তিরমিজিঃ ৪/৫৭, আবু-দাউদঃ ৪/২৬৯, ইবনে মাজাহঃ ২/৮৫৬]
ইহকালিন এই রকম শাস্তির বিধান দেখে সুশীলরা বলবেন যে 'কি অমানবিক এবং নিষ্ঠুর শাস্তি!' হ্যা আপনারা এটাকে নিষ্ঠুর এবং অমানবিক বলতে পারেন। কিন্তু আমরা সচেতন মানুষেরা মনে করি এটাই উত্তম শাস্তি। কারন, আমরা চাই না আমাদের সমাজে মরনব্যাধী কোনো রোগ দেখা দিক। আমরা চাই না এই অপরাধের কারনে আল্লাহ আমাদের মাঝে কোনো আযাব প্রদান করুক। তাই আমরা এই রকম গর্হিত কাজ থেকে মুক্তি চাই। আমরা চাই একটি সুন্দর এবং সুস্থ পৃথিবী।
যারা সমকামিতাকে বৈধতা দেয় এইডসের মতো মহামারির উত্থান তো তাদের দেশেই। যারা এই রকম গর্হিত কাজ অতীতে করেছেন তাদের উচিৎ এখন থেকেই এসব কাজ থেকে দূরে সরে আসা এবং আশেপাশের মানুষদের এই সম্পর্কে সচেতন করা। আর অতীতের কাজের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমাপ্রার্থনা করা। আল্লাহ মহা ক্ষমাশীল, তিনি চাইলে যাকে খুশি ক্ষমা করতে পারেন।
আল্লাহ তা'আলা ক্ষমা করার প্রেক্ষিতে বলেন-
"যদি তারা অনুতপ্ত হয় এবং সংশোধিত হয়, তবে তাদেরকে ছেড়ে দাও; কারণ নিশ্চয়ই আল্লাহ অনুতাপ-গ্রহণকারী, পরম দয়ালু।” [সুরা আন নিসাঃ ১৬]
পৃথিবী হলো আখিরাতের শষ্যক্ষেত্র। আমাদের কর্ম দ্বারাই আমাদের ভাগ্য নির্ধারিত হবে। তাই এমন কোনো কর্ম করে যাওয়া উচিৎ না যা মানব জাতির ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের সকলের হতে হবে উত্তম চরিত্রের অধিকারী। কথায় আছে না ব্যবহারেই বংশের পরিচয়। তাই আপনার দ্বারা আপনার বংশের পূর্ববর্তীরা এবং উত্তরসূরিরা যেন সম্মানিত হয় সে চেষ্টা করা।
সবশেষে আমাদের সকলের প্রিয় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের একটি কবিতার কিছু অংশ দিয়ে শেষ করতে চাই-
"প্রথমো যেদিন তুমি এসেছিলে ভবে,
কেঁদেছিলে একা তুমি, হেসেছিলো সবে।
এমনো জীবন তুমি করিবে গঠন,
মরণে হাসিবে তুমি কাঁদিবে ভুবন।"
Comments
Post a Comment